শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ১১:০৯ পূর্বাহ্ন

করোনা থেকে মুক্তি পেতে গায়ে মাখা হচ্ছে গরুর গোবর!

করোনা থেকে মুক্তি পেতে গায়ে মাখা হচ্ছে গরুর গোবর!

0 Shares

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : করোনাভাইরাস সংক্রমণে বিপর্যস্ত ভারত। অক্সিজেনের অভাবে অনেকেই মারা যাচ্ছেন। ভারত সরকার অক্সিজেন সহায়তা চেয়ে বিশ্বের কাছে আবেদন জানিয়েছে। মৃত্যুর মিছিল এত দীর্ঘ যে দাহ করার জন্য শ্মশানে স্থান সংকুলান হচ্ছে না। এমন পরিস্থিতিতে ধর্মের দ্বারস্থ হচ্ছেন ভারতের অনেক হিন্দুধর্মাবলম্বী। করোনা থেকে মুক্তি পেতে তারা গায়ে মাখছেন গরুর গোবর। কিন্তু ভিন্ন কথা বলছেন ভারতের চিকিৎসকরা। গরুর গোবর করোনাভাইরাস প্রতিরোধ করতে পারে, এমন ধারণার বৈজ্ঞানিক কোনো ভিত্তি নেই। বরং গোবর ব্যবহারের ফলে অন্য রোগ ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।
ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ গুজরাটের কিছু মানুষ সপ্তাহে এক দিন গোশালায় যাচ্ছেন। সেখানে তারা শরীরে গোবর ও গোমূত্র মাখছেন। তাদের বিশ্বাস, গোবর ও গোমূত্র শরীরের ইমিউনিটি সিস্টেমকে শক্তিশালী করে। করোনা আক্রান্ত অনেকেই তাই সুস্থ হতে গোশালায় ছুটছেন ।
হিন্দুধর্ম বিশ্বাস অনুযায়ী, গরুকে দেবতার বাহন করা হয়। তারা গরুর মহত্ত্ব ও পবিত্রতা স্বীকার করে । হিন্দু ধর্মগ্রন্থ বেদ, রামায়ণ, মহাভারত, পুরাণসহ সব শাস্ত্রে গরুর প্রতি অসাধারণ সম্মান প্রদর্শন করা হয়।
একটি ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানির সহকারী ম্যানেজার মনিলাল বরিসা বলেন, ‘ডাক্তাররাও এখানে আসছেন । তাদের বিশ্বাস এই থেরাপি তাদের শরীরের ইমিউনিটি সিস্টেমকে উন্নত করবে।’ এ পদ্ধতিতে তিনি গত বছর করোনা থেকে মুক্তি পেয়েছেন বলেও জানান।
তখন থেকেই শ্রী স্বামী নারায়ণ গুরুকুল বিশ্ববিদ্যা প্রতিষ্ঠানে আসা যাওয়া করছেন মনিলাল। সেখানে অনেকেই গরুর গোবর ও মূত্র শরীরে মাখিয়ে শুকানোর অপেক্ষায় রয়েছে। সেখানে তারা গরুকে জড়িয়েও ধরছে। তাছাড়া নিজেদের শক্তি বাড়ানোর জন্য যোগব্যায়াম অনুশীলন করছে। সর্বশেষে দুধ দিয়ে তারা গোসলের মাধ্যমে থেরাপি শেষ করবে।
ভারতের ডাক্তার ও বিজ্ঞানীরা এসব থেরাপি থেকে দূরে থাকতে পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু কোনো কিছুই তাদের রুখতে পারছে না। এসব থেরাপি যে শরীরে জটিলতা বাড়াতে পারে সে সর্তকবাণীও তারা কানে নিচ্ছে না। ভারতের মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের জাতীয় প্রেসিডেন্ট ডাক্তার জে এ জয়ালাল বলেন, ‘কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে গরুর গোবর বা মূত্র ইমিউনিটি সিস্টেমকে শক্তিশালী করতে পারে এমন কোনো বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা নেই। সম্পূর্ণ বিশ্বাসের ওপর ভর করে তারা এটা করছে। তাছাড়া এসব কিছু তাদের শরীরের জন্য ভয়ঙ্কর হয়ে দেখা দিতে পারে। এমনকি প্রাণী থেকে মানুষের দেহে অন্য রোগও ছড়িয়ে পড়তে পারে।
এ দিকে গোবর ও গোমূত্র থেরাপি নেয়ার জন্য যেভাবে মানুষ ভিড় করছে তাতে করে ভাইরাস আরও ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা রয়েছে। আহমেদাবাদের একটি গোশালার দায়িত্বে থাকা মধুচরণ দাস জানান, তারা অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা সীমিত করে দিয়েছেন।
ভারতে মহামারি করোনাভাইরাসে ২২.৬৬ মিলিয়ন মানুষ আক্রান্ত হয়েছে। তাদের মধ্যে ২ লাখ ৪৬ হাজার ১১৬ জন মারা গেছেন। তবে বিশেষজ্ঞদের ধারণা, মৃত্যুর সংখ্যা আরো অনেক বেশি। প্রকৃত সংখ্যা পাঁচ থেকে দশ গুণ বেশি হতে পারে। আক্রান্ত রোগীদের হাসাপাতালে স্থান পেতে যেমন লড়তে হচ্ছে তেমনি লড়তে হচ্ছে অক্সিজেন এবং ওষুধ পেতে। ফলে চিকিৎসার অভাবে অনেকেই মারা যাচ্ছেন।





প্রয়োজনে : ০১৭১১-১৩৪৩৫৫
Design By MrHostBD
Copy link
Powered by Social Snap